আল -কুরআন শিক্ষা করা ফরজ:
আল -কুরআনের প্রথম বাণী হচ্ছে, “পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।” (সূরা আলাক-১) এখানে ইক্বরা, অর্থ: পড়ো। এ আয়াতের মাধ্যমে প্রত্যেক মুসলিমকে আল্লাহ জানিয়ে দিলেন তোমরা জানার জন্য, বোঝার জন্য এবং সঠিকটা মেনে চলার জন্য পড়া-লেখা করো, অধ্যয়ন করো। অর্থাৎ জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানদের জন্য আল্লাহ তাআলা ফরজ করে দিয়েছেন। আর এটার বাস্তব নির্দেশ দিয়েছেন রাসূল (সা.)। আল -হাদীসে বর্ণিত হয়েছে,
“হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের উপরে ফরজ।” (সূনান ইবনে মাজা)
জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি আল -কুরআন শিক্ষা করাও প্রত্যেক মুসলমানের উপরে আল্লাহ ফরজ করে দিয়েছেন। রাসূল (সা.) এ সম্পর্কে মুসলমানদেরকে নির্দেশ দিয়ে বলেছেন,
“হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, তোমরা কুরআন ও ফারায়েজ (উত্তারাধিকার আইন) শিক্ষা করো এবং মানুষদেরকে শিক্ষা দাও কেননা আমাকে উঠিয়ে নেওয়া হবে।” (সূনান আত-তিরমিযি)
তাই আমাদের উপরে কর্তব্য আল -কুরআন ও ইলমে ফারায়েজ (উত্তারাধিকার আইন) শিক্ষা করা এবং এর আলোকে জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্র পরিচালনা করা।আল -কুরআন শিক্ষা করা সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত:
আল -কুরআন অধ্যয়ন করা, কুরআন জানা-বুঝার চেষ্টা করা পৃথিবীর সকল কাজের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কাজ। কারণ এ কুরআনের মধ্যে রয়েছে মানুষের জীবন পরিচালনা পদ্ধতি, হিদায়াতের সঠিক পথ। প্রত্যেক কাজ শুরু করার সময় রাসূল (সা.) বিসমিল্লাহ পড়ে (আল্লাহর নাম নিয়ে) শুরু করার কথা বলেছেন। কিন্তু কোন কাজ শুরু করার আগে ‘আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতারিজ রাজীম’ অর্থাৎ শয়তানের কুমন্ত্রনা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতে বলেননি। তবে একটি কাজ করার আগে স্বয়ং আল্লাহ তাআলা শয়তানের কুমন্ত্রনা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতে বলেছেন, সেটা হলো আল -কুরআন তিলাওয়াত বা অধ্যয়নের সময়। এ সম্পর্কে আল -কুরআনে বর্ণিত হয়েছে,আল -কুরআনের এ বক্তব্য থেকে জানা যায়, শয়তান সকল কাজে কুমন্ত্রনা দেয়, তবে কুরআন অধ্যয়নের সময় সবচেয়ে বেশী কুমন্ত্রনা দেয়। কারণ কুরআন যাতে মানুষ বুঝতে না পারে, সেজন্য শয়তান বেশী চেষ্টা করে। মুসলমানরা কুরআন থেকে দূরে সরে থাকলে শয়তান বেশী খুশি হয়। এজন্যই আল্লাহ তাআলা কুরআন অধ্যয়নের সময় শয়তান থেকে আশ্রয় চাওয়ার কথা বলেছেন। এজন্য আমাদের উচিৎ আল -কুরআন জানা ও বোঝার জন্য সবচেয়ে বেশী চেষ্টা করা।
আল -কুরআন হিদায়াতের একমাত্র কিতাব:
আল -কুরআন হচ্ছে বিশ্ব মানবাতার জন্য হিদায়াতের একমাত্র কিতাব। এই কুরআনই বিশ্বের সকল মানুষকে সঠিক পথের সন্ধান দিতে পারে, হিদায়াতের আলোয় আলোকিত করতে পারে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
“নিশ্চয় এ কুরআন এমন একটি পথ দেখায় যা সবচেয়ে সরল এবং যে মুমিনগণ নেক আমল করে তাদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার। আর যারা আখিরাতে ঈমান রাখে না আমি তাদের জন্য প্রস্তুত করেছি যন্ত্রণাদায়ক আযাব।” (সূরা বনি ইসরাইল- ৯-১০)
“অবশ্যই তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে আলো ও স্পষ্ট কিতাব এসেছে। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাদেরকে শান্তির পথ দেখান, যারা তাঁর সন্তুষ্টির অনুসরণ করে এবং তাঁর অনুমতিতে তিনি তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করেন। আর তাদেরকে সরল পথের দিকে হিদায়াত দেন।” (সূরা আল-মায়েদা- ১৫-১৬)
আল -কুরআন ছাড়া অন্য কারো কাছে হিদায়াত অন্নেষণ করা যাবে না। কেউ এটা করলে আল্লাহ নিজে তাকে গুমরাহ করে দিবেন। এ সম্পর্কে আল-হাদীসে বর্ণিত হয়েছে,“যে ব্যক্তি কুরআন ছাড়া অন্য করো কাছে হিদায়াত চাইবে, আল্লাহ তাকে পথভ্রষ্ট করে দিবেন।” (সূনান আত-তিরমিযি)অতএব, আমাদের জীবন চলার পাথ ইসলামকে সঠিকভাবে জানার জন্য হিদায়াতের একমাত্র কিতাব আল -কুরআন শিক্ষা করতে হবে।আল -কুরআনের মধ্যে সকল সমস্যার সমাধান রয়েছে: