ion_tvHot news

PM mourns the death of Sandhya Mukherjee The day of singing is over, | the evening light is gone | The first dose of Corona vaccine ends on 28 February

সিলেট এর ভাষায় আমরা নানা কথা বলব এই আমরা হক্কল সোলটি প্রোগ্রামে

সিলেট এর ভাষায় আমরা নানা কথা বলব এই আমরা হক্কল সোলটি প্রোগ্রামে

সিলেট এর ভাষায় আমরা নানা কথা বলব আপনাদের সাথে।বৃহত্তর সিলেট জেলা নিয়ে আমাদের অনেক অজানা কথা আছে। সে সব অজানা বিষয় নিয়ে কথা বলবো আমরা।বৃহত্তর সিলেট অঞ্চল প্রধানত বাংলাদেশের সিলেট বিভাগ এবং ভারতের আসামের করিমগঞ্জ, কাছাড় এবং হাইলাকান্দি জেলা জুড়ে বিস্তৃত। সিলেট অঞ্চলের ইতিহাস শুরু হয় সেই অঞ্চলে বিস্তৃত বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলির অস্তিত্ব দিয়ে যা এখন সিলেট শহর। ঐতিহাসিকভাবে শ্রীহট্ট নামে পরিচিত, মধ্যযুগের প্রথমদিকে সেনদেব বংশের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার আগে হরিকেলকামরূপের বৌদ্ধ ও হিন্দু রাজ্যগুলির দ্বারা এটি শাসিত ছিল। এই দুই হিন্দু রাজত্বের পতনের পরে, শ্রীহট্ট আরও অনেক স্বল্প ক্ষুদ্র রাজ্যের যেমন গৌড়, লাউড়, ইটা, তরফ এবং জৈন্তিয়ার রাজ্যে পরিণত হয়েছিল। চতুর্দশ শতাব্দীতে সিলেটের বিজয়ের পরে অঞ্চলটি পশ্চিমবঙ্গের লাখনৌতিতে অবস্থিত শামসুদ্দিন ফিরোজ শাহ-এর স্বতন্ত্র রাজ্যত্বের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল, তখন এই অঞ্চল জালালাবাদ নামে পরিচিত হয়।

এর পরে ১৫৭৬ সালে কররানী রাজবংশের পতনের পূর্বে, মুসলিম আফগান সর্দাররা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যগুলিতে শাসন করত পরে তা দিল্লি ও শাহী বাংলার সুলতানদের দ্বারা ক্রমান্বয়ে শাসিত হয়েছিল। বাংলার বন্যপূর্ব  হিসাবে পরিচিত অঞ্চলে, মুঘলরা সিলেটের সর্দারদের পরাজিত করতে লড়াই করেছিলেন।[3] তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ খাজা উসমানের এবং সিলেট ও প্রতাপ গড়ের সুলতান বায়োজিদ এর পরাজয়ের পরে এই অঞ্চলটি শেষ পর্যন্ত ১৬১২ সালে মুঘল শাসনের অধীনে আসে।

ঐতিহাসিক বিবরণ

অচ্যূতচরণ চৌধুরী সহ ইতিহাসবিদেরা বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে ধারণা করেন; গঙ্গাব্রহ্মপুত্র নদের সমস্ত উত্তর-পূর্ব অঞ্চল নিয়েই গঠিত ছিল প্রাচীন কামরুপ রাজ্য। যার অন্তর্ভুক্ত ছিল প্রাচীন শ্রীহট্ট বা সিলেট বিভাগ। গ্রিক বণিকের বরাত দিয়ে বলা হয়, গ্রিক বণিক 'টলেমির' বাণিজ্য বিস্তার গ্রন্থের অনুবাদে বলা হয়েছে "কিরাদিয়া" বা কিরাত দেশের উত্তরে পার্শ্ববর্তী দেশই প্রাচীন শ্রীহট্ট ভূমি। উল্লেখিত তথ্য মতে শ্রীহট্ট বা সিলেট বিভাগকে একটি প্রাচীন জনপদ ধরা হয়। তদুপরি প্রাচীন কামরুপ রাজ্যের অধিপতি ভগদত্ত রাজার উপ-রাজধানী সিলেট বিভাগের লাউড় পর্বতে বিদ্যমান থাকা এই অঞ্চলের সর্ব-প্রাচীন নিদর্শন। শ্রীহট্ট অঞ্চলে জনশ্রুতি রয়েছে, পৌরাণিক যুগে মহাভারত সমরে নিহত ভগদত্ত রাজা কামরুপ রাজ্যের শাসক ছিলেন। রাজা ভগদত্তের আমলে সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার আওতাধীন লাউড় অঞ্চলে কামরুপ রাজ্যের শাখা রাজধানী ছিল। লাউড় অঞ্চলে উচু একটি পাহাড় দেখিয়ে লোকে সেখানে রাজা ভগদত্তের রাজধানীর নির্দেশ করে থাকে। পৌরাণিক কালে কামরুপ রাজা ভগদত্ত এদেশে (শ্রীহট্টে) আসলে লাউড়ের রাজধানী হতে দিনারপুরের প্রাচীন বাণিজ্য ঘাঁটি (বর্তমান দিনারপুর সদরঘাট) পর্যন্ত নৌকায় ভ্রমণ করতেন। লাউড় পাহাড়ের সুড়ঙ্গ স্থানে রাজা ভগদত্তের রাজ বাড়ি ছিল বলে ধারণা করা হয়। সেই রাজ বাড়ীর ধ্বংসাবশেষ আজও বিদ্যমান।

প্রাচীনকালে হিন্দু রাজাদের দ্বারা এদেশ (সিলেট) শাসিত হয়েছে, যার অনুমান করা হয় নিধনপুরে প্রাপ্ত ভাস্করভর্মনের তাম্রলিপি সহ ভাটেরায় প্রাপ্ত আরো দুই খানা ঐতিহাসিক তাম্রফলক থেকে। শ্রী যুক্ত স্বরুপ রায় “শ্রীহট্ট ভূগোল”মৌলবী আহমদ সাহেব“শ্রীহট্ট দর্পনপুস্তকে লিখেছেন, উক্ত তাম্র ফলকদ্বয় পাঠে সাগর পশ্চিমে পদ পাওয়া যায়। পরবর্তিতে প্রত্নতত্ববিদ ডঃ রাজেন্দ্র লাল মিত্র উক্ত ফলকদ্বয় পাঠ করে এদেশের পশ্চিমাংশে প্রাচীন কালে বিরাট সাগর বিদ্যমান ছিল বলে, অর্থ করেন। ঐতিহাসিক অচ্যুতচরন চৌধুরী ত্রিপুরার ইতিহাস গ্রন্থের বরাতে লিখেন, শ্রীহট্টের দক্ষিণ পশ্চিমাংশ, ময়মনসিংহের পূর্বাংশ, ত্রিপুরার উত্তর পশ্চিমাংশে পুরাকালে বৃহত্তর হ্রদ ছিল। পরে ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় ইহা ভরাট হয়ে, ঢাকা ময়মনসিং ও ত্রিপুরার সন্ধিস্থলে পরিণত হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের চীনা পর্যটক হিয়েং সাং এই অঞ্চল ভ্রমণ করে, শিলিচতলকে (শ্রীহট্টকে) সমুদ্র নিকট বর্তী দেশ উল্লেখ করেন

গবেষণা ও নৃতাত্ত্বিকভাবে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় আর্যজাতির আগমন কাল চতুর্থ-পঞ্চম শতক ধরা হয়।[5] ভারতবর্ষের আর্যযুগের শুরুতে যখন বঙ্গদেশে জনবসতি স্থাপনের প্রমাণ ছিলনা, তখন সিলেট একটি দেশ হিসেবে খ্যাত ছিল। যখন রামায়ণ লিখিত হয় তখন বঙ্গভূমী আর্যগণের কাছে পরিচিত ছিল, কিন্তু মানুষ বাসযোগ্য ছিল না। সে সময় উত্তর-পূর্ব বঙ্গই বঙ্গভূমী হিসেবে বাসযোগ্য ছিল।